কাঠ,কয়লা অথবা তেল যখন জ্বলে,তখন মানুষ মনে করে ঐ সব পদার্থ জ্বলতে জ্বলতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।জ্বলন্ত মোমবাতির ক্ষেত্রেও সাধারণতঃ ঐ ধারণা পোষন করে।কিন্তু প্রকৃতপক্ষে,ঐ সব পদার্থ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় না।ওরা শুধু ওদের রূপ পরিবর্তন করে। প্রজ্বলন (com-bustion) হল একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া।অক্রিজেনের উপস্থিতিতেই তা সংঘটিত হয়।উক্ত প্রক্রিয়ায় পদার্থের সৃষ্টিও হয় না ধ্বংসও হয় না।শুধুমাত্র তার রূপের পরিবর্তন ঘটে।এটাই “পদার্থের অবিনশ্বরতা”সুত্র নামে পরিচিত।
মোমবাতি যখন জ্বলতে থাকে তখন তার মোম অন্য পদার্থ রূপান্তরিত হয়।যে মূহূর্তে আমরা মোম বাতির পোলতে জ্বালাই,সে মূহূর্তে তাপের প্রভাবে মোম গলতে আরম্ভ করে।পৃষ্ঠ টানের(surface tension)জন্য গলিত মোম পলতেয় উঠে আসে।পৃষ্ঠ টানে তরল পদার্থের একটি বিশেষ ধর্ম।ঐ ধর্মের জন্যই চোষ কাগজ (blotting paper)কালি চুষে নেয়।গলিত মোম পরে গ্যাসীয় পদার্থে পরিবর্তিত হয়।ঐ গ্যাস তখন জ্বলতে শুরু করে এবং তাপ ও আলো উৎপন্ন হয়।
মোম হল একটি যৌগিক হাইড্রকার্বন যার মধ্যে হাইড্রজেন ও কার্বন বিদ্যমান।প্রজ্বলনকালে বাতাসের অক্রিজেনের সাথে কার্বন সংযুক্ত হয় তৈরী হয় কার্বন-ডাই-অক্রাইড।মোমর হাইড্রজেনের সাথে বাতাসের অক্রিজেন মিলে তৈরী হচ্ছে জ্বলীয় বাষ্প।উক্ত দুই রাসায়নিক বিক্রিয়ায় মোম ব্যায়িত হয় এবং তার ফলে মোমবাতির আকার ছোট হতে থাকে।যদি আমরা কার্বন-ডাই-অক্রাইড ও জ্বলীয়বাষ্প সংগ্রহ করে ওজন করি তাহলে দেখবে যে মূল মোমবাতির থেকে ওদের ওজন বেশি।
কার্বন ও হাইড্রজেনের সাথে অক্রিজেন সংযুক্তিই হল অতিরিক্ত ওজনের কারণ।সুতরাং,আমরা দেখতে পাই যে মোমবাতি যখন জ্বলে তখন তার মোম ধ্বংস হয় না,কবেলমাত্র কার্বন-ডাই-অক্রাইড আর জলীয়বাষ্পেই তার রূপান্তর ঘটে।