আজকের লেখার উদ্দেশ্য হলো কিছু ভ্রান্ত ধারণা সবার সামনে তুলে ধরার জন্য। এখানে সবচেয়ে বেশি কথা বলা হবে নবীন ফ্রিল্যান্সারদের নিয়ে। সবশেষে থাকবে সিনিয়রদের জন্য কিছু কথা। কোথা হতে শুরু করবো তাই বুঝতে পারছি না। আমি লিখতে থাকি। আপনারাই নিজের মত করে সাজিয়ে নিন প্লিজ।
সম্প্রতি আমার এক বড় ভাই ফেসবুকে কোন এক গ্রুপে একটা পোস্ট দিয়েছিলেন। সেই পোস্ট পড়ার পরেই আমি এই লেখাটা লিখতে উৎসাহিত হলাম। (বলা বাহুল্য বড় ভাইটি ফ্রিল্যান্সিং এ মাত্র চারমাস বয়স এবং এখন পর্যন্ত একটা কাজ করেছেন) সেই পোস্ট এর মুল বক্তব্য ছিল অনেকটা এরকম –
আপনারা যারা দীর্ঘদিন যাবত ফ্রিল্যান্সিং-এর সাথে জড়িত তারা প্রায় সকলেই টিম গঠন করে কাজ করেন। অনেকের নিজের টিম থাকে, অনেকেই সিনিয়র কারোর টিমে কাজ করেন। এখন এই টিমে কাজ করার কিন্তু কিছু শর্ত থাকে। প্রথম শর্তই থাকে সবার ক্ষেত্রে যে, অ্যাডমিনের কথা অক্ষরে অক্ষরে শুনতে হবে এবং তার কথা সবাইকে মানতে হবে। এরপর ফিনান্সিয়াল একটা বিষয় থাকে সেটা হল, টিমের সকল মেম্বারদেরকেই একটা নির্দিষ্ট চার্জ দিতে হবে অ্যাডমিনকে। সেটা চুক্তি মোতাবেক হতে পারে দশ ভাগ কিংবা পনেরো ভাগ, অনেকেই বিশ ভাগ ও রাখেন। ক্ষেত্র বিশেষে অনেকে চল্লিশ ভাগ পর্যন্ত রাখেন। (এটা আমি একটু পরে বলছি)। এখন আমার বড়ো ভায়ের কথা হল আমরা অ্যাডমিনরা কেন এই চার্জ রাখবো? নতুনরা টিমে জয়েন করে “হেল্প” পাবার আশায়। আর হেল্প তো টাকার বিনিময়ে হয় না। সাহায্য হল সেটাই যেটার কোন দাবী থাকে না। তাহলে কেন অ্যাডমিনরা এই চার্জ রাখবেন? তারা সিনিয়র হয়ে কেন নতুনদের উপর এই অত্যাচার কিংবা জুলুম করবেন? এমনকি তিনি এটাকে “রক্তচোষার” সাথে তুলনা করেছেন।
এখন একটু মেইন পয়েন্ট এ আসি। আমরা টিম কেন তৈরি করি? ওডেস্ক, ফ্রীল্যান্সার, ফাইভার, আপওয়ার্ক এ আসলে টিম বলতে মূলত কিছু নেই। কোম্পানি আছে এবং আমরা যেটাকে টিম বলি তার আসল নাম হল কোম্পানি। আর একটা কোম্পানির ভেতরে অনেক গুলো টিম থাকতে পারে। যেমন কনসালটেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন ইত্যাদি সবই হয় একেকটা টিম এই কোম্পানির ভেতরেই। আর কোম্পানির অপর প্রতিশব্দ হল বিজনেস সেটা একটা শিশুও জানে। যাই হোক, কোম্পানি বা টিম তৈরি করার উদ্দেশ্য আমার মতে দুটি। প্রথম এবং প্রধানটি হল নিজের কাজের চাপ বেড়ে গেলে তখন সহযোগী কাউকে সেই কাজের কিছু অংশ দিয়ে দেই এবং কাজ শেষ হলে তাকে সেখান থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ চার্জ কেটে বাকিটা দিয়ে দেই। এবং আরেকটি হল, কাজের চাপ তো আর সবসময় থাকে না। তবে অনেক নতুন ফ্রিল্যান্সার টিমে জয়েন করার জন্য অনুরোধ করে এবং তাদের অনেককেই টিমে নিয়ে নেই। একদম শুরু থেকে তাকে শেখাই সবকিছু। কিভাবে কি করতে হবে। কিছুদিনের মধ্যেই সে এক্সপার্ট হয়ে যায় এবং কাজ পেয়ে যায় সহজেই। এভাবে টিমের প্রোফাইল ও বাড়তে থাকে। আর বলা বাহুল্য, চুক্তি মোতাবেক টিমের চার্জ অবশ্যই কেটে রাখা হয় মাসিক পেমেন্টে।
এবার কথা হল, টিমে জয়েন করানোর পর তাকে সব শেখায় ম্যানেজার বা টিম অ্যাডমিন বা প্রধান যেভাবেই বলেন। তাকে প্রথম কাজটাও কিন্তু অ্যাডমিন এনে দেয়। কারণ অনেকের ক্ষেত্রেই তখন সেই ক্ষমতা থাকে না যে সে নিজে একটা কাজ নিবে। সে কোন সাক্ষাতকার পেলে বা জবে হায়ার হলে বায়ার মেইন্টেইন করে সব অ্যাডমিন। তখনতো সে কাজে বিড ই করতে পারে না, বায়ার এর কি বুঝবে? আর একজন অ্যাডমিনের কিন্তু কম চাপ থাকে না। তার নিজের কাজ করতে হয় পাশাপাশি টিমের সকলের সব ধরনের মেসেজ পড়তে হয় ও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তার রিপ্লাই পর্যন্ত দিতে হয়। ফ্রিল্যান্সিং ক্ষেত্রে যারা নবীশ তারা কি জানেন এর ঝামেলা কতটুকু? রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায় যখন একের পর এক ইন্টারভিউ কিংবা হায়ারিং মেসেজ আসতে থাকে।
বড় কথাটি তো বলাই হয় নি, বেশিরভাগ নবীন ভাইয়ারা যারা ফ্রিল্যান্সিং করতে আসেন তারা নেটের কোন কাজই জানেন না। শতকরা হয়তো দুইজন পাওয়া যাবে যারা কিনা গ্রাফিক্স, ওয়েব ডিজাইন বা সফটওয়্যার এর কাজ জানেন। তাদের নিয়ে বেশি কষ্ট হয় না। বরং বাকি ভাইদের নিয়ে মাথা ব্যথার শেষ নেই। টিমে জয়েন করেই তাকে শেখাতে হয় এস ই ও, এস এম এম এর মতন তুলনামূলক সহজ কাজগুলো। (আমার সেই বড় ভাইটি গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ওয়েব ডিজাইন এর কাজ পারেন। তবে তাকে আমিই বলেছিলাম, আপনি এই দক্ষতা দিয়ে ওডেস্ক এ কাজ করতে পারবেন না। ছয়মাস আপনাকে আরো শিখতে হবে কিংবা আপনি আপাতত অন্য কাজ ধরুন, পরে তাকে আমিই এস ই ও, এস এম এম এর কাজ শিখাই)
এবার নবীনদের প্রতি, আপনার টিম অ্যাডমিন আপনাকে কাজ শিখিয়েছে, ফ্রিল্যান্সিং এর সব নিয়ম কানুন শিখিয়েছে, আপনি তো আগে ফেসবুক ছাড়া কিছুই চিনতেন না। তিনিতো আর আপনাকে শেখাতে পাঁচ বা দশ হাজার টাকা চাননি যেটা কোচিং সেন্টার থেকে নেয়। তার নিজের কাজের ফাঁকে আপনাকে শিখিয়েছেন। তাহলে আপনার এতো কষ্ট কেন টিমের দশ বা বিশ ভাগ ভ্যাট দিতে? আপনার প্রথম কাজটাও তো তারই দেয়া তাই না? আপনার ফিডব্যাক আপগ্রেড হচ্ছে কিন্তু তার টিম থেকেই।
এই ভাই, নিজে নিজে কি পারতেন এতো সহজে এত দ্রুত এতদূর আসতে? আমরা কিন্তু পারিনি। রাতের পর রাত জাগতে হয়েছে আমাদের। খাওয়া ঘুম হয়নি। লেখাপড়ার সর্বনাশ করেছি আমরা নিজেদের। বাবা মায়ের শত নিষেধও শুনিনি। একটা সমস্যা হলে কাছে কাউকে পাইনি সমাধান পাবার জন্য। হাজার বার হতাশ হয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর ইতি টেনেছি। আমাদের সান্ত্বনা দেবার কেউ কিন্তু ছিলনা। পরেরদিনই আবার পরাজিত বীরের মত পিসির সামনে বসেছি। হা করে মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকতাম মাঝে মাঝে, কিভাবে কি করব এসব ভেবে। দিন যায়, সপ্তাহ যায়, মাস যায় কোন কাজ পাইনি। কবে পাব তার কোন কূল কিনারা করতে পারতাম না। এর পরেও তো আমরা হাল ছাড়িনি। কে সাহায্য করেছে আমাদের? রাখুন, একটু পরে আবার আসছি এখানে।
কথা কিন্তু শেষ হয়নি। অনেক কথা এখনো বাকি। আমার সেই বড় ভাই আরো কিছু কথা বলেছিলেন। সেগুলো হল এরকম।
১) আমরা সকলেই মাইক্রোসফট এর উইন্ডোজ ব্যবহার করি, বাজার মূল্য প্রায় ১৫ হাজার টাকা। অ্যাডোবি কর্পোরেশন এর স্যুট এর দাম প্রায় ৫০ হাজার টাকা। অফিস স্যুট এর দাম প্রায় ২০ হাজার টাকা। নিরো সফট এর দাম ও প্রায় ৩০ হাজার টাকা। আমরা কয়জনে এগুলো দাম দিয়ে কিনি? আমরা সবাই এগুলো বাংলা কথায় বিনামূল্যে ব্যবহার করি। আমি, আপনি সবাই।
২) আমরা নেট থেকে শিখছি, মাগনা। ইউটিউব ভিডিও থেকে, w3schools এর মত সাইট থেকে। অনলাইনের লাখ লাখ কোটি রিসোর্স থেকে আমরা মাগনা শিখছি প্রতিনিয়ত। হ্যাঁ সত্য, এসবই আমরা ফ্রি পাচ্ছি।
বড় ভায়ের কথা হচ্ছে, আপনি এতকিছু ফ্রিতে বাগিয়ে নিচ্ছেন, আপনার কোন টাকা খরচ হচ্ছে না, তাহলে টিমে কেন চার্জ রাখবেন? কেন কাজের জন্য ভ্যাট কাটবেন?
এবার নবীশ ভাইদের প্রতি বলি, আমি একটা সফট ও কিনি নি। সব পাইরেসি। কেন, আপনি কি কিনেছেন? না কিনেন নি তো, তাহলে কিভাবে বললেন? সমান পাল্লায় মানুষকে মাপতে শিখুন। আমারো পাইরেসি, আপনার পাইরেসি। সুতরাং এটা কোন প্রশ্ন হতে পারে না কোন দিনও।
এখন, নেট থেকে শেখার ব্যাপারে যেটা বলব, নতুন অবস্থা নেটে একটা ভিডিও খুঁজে বের করতে কেমন ধকল যায়? আশা করি সবাই জানেন। আমাদেরও একসময় তেমনই লাগতো। আপনার তো লাগে না। কারণ আপনাকে শেখাচ্ছে আপনার অ্যাডমিন। এস ই ও শিখতেও কিন্তু অনেক ঘাটাঘাটি করা লাগে। কয়জন নতুন ফ্রিল্যান্সার এত খোঁজে? অনেক কিছুই যোগান দেয় সেই অ্যাডমিন। কিছু একটা না বুঝলেই তো অ্যাডমিনের কাছে ফোন দেন। কেন, আপনি কি জানেন তিনি কতটা চাপে থাকেন? আপনি কি জানেন তিনি এখন আপনার ফোন ধরার মত পরিস্থিতিতে আছেন কিনা? জানেন না। যদি জানতেনই তাহলে ফোন দিতে আপনার ভয় লাগতো, নিজেরই খারাপ লাগতো। তাহলে এত প্রশ্ন কিসের?
– – – – – – – – – – – – –
এখানে লেখায় একটা বিরতি টানলাম। আমার ব্যক্তিগত একটা প্রসঙ্গে আসি। তাহলে আরো কিছু বিষয় পরিষ্কার করতে পারবো। আমার দলের একজন কাজ পাচ্ছে না। আমার নিজের একটা কাজ তাকে দিলাম করতে। সব খোলাসা করেই বললাম যে এই প্রকল্পে এ কাজ করলে প্রতি সপ্তাহে আমার অ্যাকাউন্টে সাত হাজার টাকা আসবে। ঠিক আছে। তিনি করলেন। আমি তাকে প্রথমে সাড়ে তিন হাজার এবং পরে আরো এক হাজার, অর্থাৎ সাড়ে চার হাজার টাকা দিলাম। অবাক বিষয় হল, এতেও তিনি খুশি নন। তাকে বললাম দেখেন, আপনি যে সাত হাজার টাকার কাজ করছেন সেটা আমি বলেছি বলেই কিন্তু আপনি জানেন। আর আপনার লেভেলে এটা মোটেও সাত হাজার টাকার কাজ নয়। বড়জোর তিন হাজার টাকারই হবে? কারণ আপনি নতুন। এই একই কাজে হায়ার হলে আপনার রেট অনেক কম থাকতো। আর মূল বিষয় হলো, আমি কিন্তু সব কিছু খোলাসা করে বলেছি। আমার আসল রেট আপনার কাছে লুকাইনি। তাই কারচুপির কিছু নাই। সো এখানে আর কথা বলার কিছু দেখি না আমি। আপনাকে সাড়ে চার হাজার টাকা দিছি। অন্য কেউ হলে তিন হাজার টাকার বেশি দিতো কিনা আমি জানি না। তিনি আর কথা বললেন না।
আরেক সিনিয়র ফ্রিল্যান্সার ভাই (রিয়াদ মাহফুজ ভাই) আমার এই সাড়ে চার হাজার টাকা দেয়ার কথা শুনেই অবাক হলেন। বলল তুমি কি মিয়া হাতেম তাই নাকি? একটা কাজ পেতে কত কষ্ট হয়, তাকি সে জানে? সে চাইলো আর তুমি দিয়ে দিলে? এতো বেশি আদর দিয়ে লাই দিও না। শেষে দেখবা নিজেই বিপদে পরবা। আমি বললাম ওকে বাদ দেন ভাই।
কিছুদিন পরে আমার আরেকটা কাজ সেই ভাইকে দিয়েই করালাম। ২৫ ডলার আয় হল। এবার সরাসরি রিয়াদ ভায়ের কাছে বললাম, ভাই কত টাকা দেব? ওনার সরাসরি কথা, পঞ্চাশ পারসেন্ট দিবেন। কারণ তোমার নিজের আইডিতে কাজ, বায়ার ধরছ তুমি। ফিডব্যাক খারাপ হলেও তোমার হবে। তার তো কিছুই হবে না। পঞ্চাশ দিয়ে দাও। আমি বললাম সরি ভাই, এতো কম আমি কোনদিন দিতে পারবো না। রিয়াদ ভাই অবাক। এবার আমি নিজে থেকেই চিন্তা করলাম। আসলেই রিয়াদ ভাই ঠিকই বলেছেন। (উল্লেখ্য, আমার টিমের নরমাল চার্জ দশ পারসেন্ট)
এর পরেরদিন আমি সেই ভাইকে ফোন দিয়ে বললাম যে তাকে ষাট পারসেন্ট দেয়া হবে। চল্লিশ থাকবে টিমে। এই কথা শুনে তিনি অবাক। বলা বাহুল্য এর কিছুদিন আগেই আমি (রক্তচুষে নিচ্ছে কিছু সিনিয়র ফ্রিল্যান্সার) নামক একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেখানে অনেক অমানবিকতার কথা তুলে ধরেছিলাম। এই ভাই আমাকেই আমার কথা শুনালেন। বললেন যে ভাই, নিজেই তো এত বড় পোস্ট দিয়েছেন, তাহলে এখন কেনো আমার ৪০ ভাগ কেটে রাখবেন? আমি তাকে সব বুঝিয়ে বললাম যে, আপনার নিজের কাজ হলে মাত্র দশ ভাগ হত এটা। কিন্তু আমার আইডি, আমার বায়ার, ফিডব্যাক খারাপ হলেও আমার। আপনি তো শুধু কাজ করেছেন। না তিনি মানতে নারাজ। এতো কম নিবেন না। তখন তাকে একটু ভালভাবে বললাম, আপনি কি ভাবছেন আমি আপনাকে ঠকাচ্ছি? আপনার টাকা মেরে খাচ্ছি? যদি তা হতো তাহলে এতদিনে আমার টিম আরো অনেক অনেক আপগ্রেড হত, আমার মাসিক ইনকাম ডাবল হয়ে যেত আরো কয়েকমাস আগেই।
আপনি যে বললেন আমি রক্তচোষাদের মত টাকা কেটে নিচ্ছি, আপনি রক্তচোষার সংজ্ঞা জানেন? আপনি কি বলেছেন তা আপনি নিজেও জানেন না ভাই। আমি এমন অনেক ফ্রিল্যান্সার চিনি যারা কোনদিন আসল ওয়ার্কিং রেট ফাঁস করে না। ইচ্ছামতন কাজ করাবে, ইচ্ছা মত টাকা দিবে। তারা আপনার হাতে সামান্য কিছু টাকা ধরিয়ে দিতো, আপনি জানতেনও না যে আপনি কত টাকার কাজ করেছেন। তিনি আপডেট হলেন এবং সব শেষে রাজি হলেন।
– – – – – – – – – – – – –
আমার প্রসঙ্গ শেষ। এবার কিছুক্ষণের জন্য দার্শনিক হয়ে যাই এবং আস্তে আস্তে শেষ করি।
সবাইকে দিয়ে সবকিছু হয়না। এটা আমার কথা না। গুণীদের কথা। এই পর্যন্ত অনেককেই দেখলাম ফ্রিল্যান্সিং করতে এসে পিটিসি সাইটে ক্লিক করছে। শেষ এ গিয়ে গার্মেন্টস এ চাকরি করছে। কেন? এর কারণ মানসিকতা। ছোট হতে শিখুন। তাহলে বড়ো হতে পারবেন। আর যদি নিজেকে খুব বড় ভাবেন, তাহলে একটা ছাগলও আপনাকে দাম দিবে না। এটাই ধ্রুব সত্য কথা। সবসময় মনে রাখবেন যে আপনাকে শেখাতে পেরেছে কিছু, তার কথা অবশ্যই মানা উচিত। কারণ সবাই শেখাবে না। অনেকেই চাইবে আপনাকে দিয়ে ফ্রি কাজ করিয়ে নিতে। সেদিনও ফেসবুক একটা গ্রুপে দেখলাম একলোকের কাণ্ড। টিমের সবার কাছ থেকে পঞ্চাশ কেটে নিচ্ছে। ওই টিমের কয়েকজনের সাথে কথা হয়েছে আমার চ্যাট এ। কথা শুনে মনে হলো তাদের পায়ে দড়ি দিয়ে রাখা হয়েছিলো। ইচ্ছামত ঘুরিয়ে নিজের স্বার্থ বুঝে নিয়েছে অ্যাডমিন। ভেবে দেখুন একবার, এরকম অ্যাডমিনের কাছে গেলে আপনি যে টাকা পাবেন, শেষে ফ্রিল্যান্সিং পেশা থেকেই আপনার মন উঠে যাবে। এর জন্য দায়ী কে? আপনি নিজেই। কারণ আপনি না জেনে তার কাছে গিয়েছেন।
শেষ কথা। একটা কাজ পাওয়া এতো সহজ নয়। মনে রাখবেন, যে আপনাকে শেখানোর মানসিকতা দেখাচ্ছে সে কখনোই আপনার ক্ষতি করবে না। সে যদি কোন প্রজেক্ট এ আপনাকে টাকা নাও দেয়, ভেবে নিন সে ইচ্ছা করেই আপনার ভালর জন্য কাজটি করেছে। আর যে শেখাতে চাইবে না, ধরে নিন তার কাছে আপনি লস ছাড়া কিছু পাবেন না। আর সব শেষে আমার একটাই কথা, বয়স নয়, মনের দিক থেকে বড় হওয়ার চেষ্টা করুন। বেস্ট অফ লাক। শুভকামনা রইলো সকলকে।