কিভাবে একটি প্রয়োজনের উপযুক্ত ওয়ারলেস রাউটার বেছে নিবেন.!

wireless router

কোন ওয়ার লেস রাউটারটি আপনার জন্য বেছে নিবেন তা নিয়ে বিভ্রান্ত; আপনি ওয়ার লেস হেল্পের সঠিক স্থানটি নির্বাচন করেছেন।

বাড়িতে বা ছোট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য সঠিক ওয়ারলেস রাউটারটি নির্বাচন করা বিভ্রান্তিকর। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের রাউটার পাওয়া যাচ্ছে। আপনি নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অথবা বাড়িতে ব্যবহারের জন্য অবশ্যই এমন একটি রাউটার চাইবেন যেটি ভাল পারফর্মেন্সের সঙ্গে পর্যাপ্ত ওয়ারলেস কাভারেজ দেয় এবং আগামী কয়েক বছরে আপগ্রেড করতে না হয়।

প্রথমে বিবেচনা করুন রাউটারটি আপনার কতটা প্রয়োজন। আপনি প্রতিনিয়ত ব্রাউসিং ও স্ট্রিমিং করলে আপনার রাউটারের কোন প্রয়োজন নেই। আপনার স্মার্টফোন যদি ওয়াই ফাই কানেকশন ছাড়া প্রয়োজনীয় সফট্ওয়ার আপডেট না নেয় তবে একটি ওয়াই ফাই মডেম নিতে পারেন বা আপনার ব্রডব্যান্ড কানেকশনের সাথে একটি রাউটার ব্যবহার করতে পারেন।

আপনার যদি শুধুমাত্র একটি ওয়ার লেস নেটওয়ার্কের প্রয়োজন হয় তবে কমদামে ছোট নেটওয়ার্কের জন্য একটি রাউটার নিতে পারেন। আপনার যদি সিকিউরিটি, প্যারেনটাল কণ্ট্রোল, ইউ এস বি প্রিণ্টার, এক্সটার্নাল স্টোরেজ ডিভাইস ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় তবে বেশীদামের একটি রাউটার নিতে পারেন।

অনেকে ইউজার রিভিউ দেখে ইলেকট্রনিক প্রডাক্টক্স কিনে থাকেন। তবে যা অন্য একজনের কাজে লাগছে তা আপনার কাজে নাও লাগতে পারে। অনেক সময় রিভিউ, প্রডাক্ট মার্কেটিং এর জন্য করা হয়ে থাকে। একারণে আপনি নিজের উপকারের কথা ভেবে কোন পণ্যটি কিনবেন তা বিবেচনা করুন।

আপনার যদি ল্যাপটপ বা পিসি ব্যবহারে সরাসরি ডি এস এল মডেম সংযোগ প্রয়োজন হয়, আপনার বাসা বা অফিসে আপনি ছাড়া অন্য ইউজার বা এমন কোন ডিভাইস নেই যাতে আপনার মডেমের মাধ্যমে সংযোগের প্রয়োজন হবে, আপনাকে একটি স্থানে চলাচলের মাধ্যমে কম্পিউটিং এবং ইণ্টারনেট সার্ফিং করতে হচ্ছে না – তবে আপনার রাউটারের প্রয়োজন একেবারে নেই। বাজারে বিভিন্ন প্যাকেজসহ ওয়াইফাই মডেম পাওয়া যায় আপনি সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

তবে আপনি হেভি ডিউটি গেমার বা মাল্টিমিডিয়ার কাজ করলে আনলিমিটেড ব্রডব্যান্ড কানেকশনের সাথে রাউটার ব্যবহার করতে পারেন।

নিজেকে বিবেচনা করুন ইউজার হিসেবে। বাড়িতে আপনি একা ইউজার হলে এবং আপনি হেভি ডিউটি গেমার, মাল্টিমিডিয়া এন্থুজিয়াস্ট বা আউট সোর্সার হলে সিঙ্গেল ব্যান্ড রাউটার ব্যবহার করতে পারেন। বাজারে কিছু রাউটার পাওয়া যায় তাদের জন্য যারা প্রতিনিয়ত হাই ডেফিনিশন ভিডিও স্ট্রীমিং বা বড় ফাইল শেয়ারে কাজ করে থাকেন।

রাউটারের ব্যান্ড সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিন। রাউটার বিবেচনা করার ক্ষেত্রে ব্যান্ডের কথা স্মরণ রাখতে হবে। ২.৪ গিগাহার্টস এবং ৫ গিগাহার্টস ফ্রিকুয়েন্সিতে ওয়ার লেস কমিউনিকেশন অপরেট করা হয়।

৮০২.১১ বি এবং জি ডিভাইসগুলো ব্যবহার করে ২.৪ গিগাহার্টস ব্যান্ড, যেখানে ৮০২.১১ এন ব্যবহার করতে পারে ২.৪ অথবা ৫ গিগাহার্টস ব্যান্ড। ৮০২.১১ এ সি ব্যবহার করে শুধুমাত্র ৫ গিগাহার্টস ব্যান্ড।

সিঙ্গেল ব্যান্ড ২.৪ গিগাহার্টস রাউটার সাধারণত ছোট ওয়ারলেস নেটওয়ার্কে ব্যবহার করা হয় এবং ডুয়াল ব্যান্ড ২.৪ এবং ৫ গিগাহার্টস ফ্রিকুয়েন্সি অপরেট করে থাকে।

৫ গিগাহার্টসের ব্যান্ড ২.৪ গিগাহার্টস ব্যান্ডের থেকে কম ইউজার ধারণ ক্ষমতা রাখে। তাই এরকম নেটওয়ার্ক গেমিং এবং ফাইল স্ট্রিমিং এর উপযোগী। আপনি এর ইন্টারনাল পারফর্মেন্স ভাল পাবেন।

৫ গিগাহার্টসের একটি সমস্যা হলো, ২.৪ গিগাহার্টসের রাউটারগুলোর মতো বেশি দূরের সিগনাল বজায় রাখতে পারেনা ।আপনার ডুয়াল ব্যান্ডের রাউটারটির ৫ গিগাহার্টসের সুবিধা গ্রহন করতে হলে আপনাকে ভীষণ চিন্তা-ভাবনা করে আপনার অফিস অথবা বাড়িতে রাউটারের অবস্থানটি নির্ধারণ করতে হবে।

৩০০ এম বি পি এস, ৯০০ এম বি পি এস, ১৯০০ এম বি পি এস বিভিন্ন স্পীডের রাউটার আপনি বাজারে পাবেন। রাউটার প্যাকেজিং এ ৩টি ডিজিটের মাধ্যমে এর স্পীড দেয়া থাকে। ওয়ার লেস নেটওয়ার্কে ব্যবহার করার জন্য আপনার কোন ডিভাইসের স্পীড সম্পর্কে যদি নির্দিষ্ট করে বলা থাকে তবে আপনাকে অবশ্যই সেই স্পীডের রাউটার ব্যবহার করতে হবে।

কয়েক বছর আগে সর্বোচ্চ ৩০০ এম বি পি এস স্পীডের রাউটার পাওয়া যেত, এই রাউটারগুলো কোন ইণ্টারফিয়ারেন্স ছাড়া হলে ৩০০ এম বি পি এস স্পীড পাওয়া যেত। এখনকার রাউটারগুলো দিয়ে ১৭৫০ – ১৯০০ এম বি পি এস স্পীড পাওয়া সম্ভব।

চ্যানেল ওভারল্যাপ এবং ইণ্টারফিয়ারেন্সের কারণে আপনি তখনই আসল স্পীড পাবেন যখন আপনার ভেন্ডর আপনাকে দিবে। একটি ফাস্ট রাউটার ইন্টারনেট স্পীড বাড়িয়ে দিবে না, এটি আপনার আই এস পি দ্বারা সেট করা নেটওয়ার্কটিকে ভাল পারফর্ম করতে সাহায্য করবে।

বাজারের নতুন রাউটারগুলো সর্বচ্চ ডাব্লু পি এ ২ সাপোর্ট করে। কিছু রাউটারে এস ডি কার্ড স্লট রয়েছে, আপনি যদি ইউ এস বি পোর্টের মাধ্যমে প্রিণ্টার বা এক্সটার্নাল ড্রাইভ শেয়ার করতে চান, সেরকম রাউটারও বেছে নিতে পারেন।

আশা করি আপনাদেরকে রাউটার কেনা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। এখন আপনি ইন্টারনেটে সার্চ করে কোন প্রডাক্ট সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন, রাউটার সেলস পার্সনটিকে আপনি কোন ধরণের প্রডাক্ট চাচ্ছেন তা বুঝাতে পারবেন এবং প্রয়োজন উপযুক্ত একটি রাউটার বেছে নিতে পারবেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *