৪৪ যোহান উলফগ্যঙ ভন গ্যেটে

Johann-Wolfgang-von-Goethe

৪৪.যোহান উলফগ্যং ভন গ্যেটে
(১৭৪৯-১৮৩২)

অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে জামনিতে প্রকাশিত হল একখানি উপন্যাস, নাম “” (তরুণ ভেটারের শোক)। উপন্যাস প্রকাশিত হবার সাথে সাথে সমস্ত জামানিতে আলোড়ন পড়ে গেল। ক্রমশই তার ঢেউ ধেশের সীমানা ছাড়িয়ে পড়ল সমস্ত ইউরোপে, এমনকি সুদূর চীনেও। কাহিনীর নায়ক ভেটর এক ছন্নছাড়া যুবক। তার কবি মন স্বপ্নের জগতে বাস করে।

মাঝে মাঝেই আঘাত পায়, বেদনায় ভেঙে পড়ে। আবার সব ভুলে নতুন করে স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সে স্বপ্নও ভেঙে যায়। নতুন জীবনের আশায় শহরের কাচে এক গ্রামে এল। গ্রামের মুক্ত প্রকৃতি, গাছ, ফুল, পাখি মানুষ মুগ্ধ করে ভেটরকে , প্রিয়তম বন্ধু হেলমকে চিঠি লেখে ভেটর। এই চিঠির মালা সাজিয়েই সৃষ্টি হয়েছে উপন্যাস। জীবনের আঘাত ব্যথতা হতাশায় শেষ পযন্ত সব আশা হারিয়ে আত্মহত্যা করে ভেটর।

ভেটরের আশা নিরাশা তার কল্পনা রোমান্স সমস্ত মানুষের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করল। যুবক-যুবতীদের কাছে ভেটর হয়ে উঠল আদশ। উপন্যাসের পাতা ছড়িয়ে ভেটর হয়ে উঠল এক জীবন্ত মানব। তার অনুকরণে ছেলেরা পরতে আরম্ভ করল নীল কোট, হলদে ওয়েস্ট কোট। মেয়েরা নায়িকার মত সাদা পোশাক আর পিঙ্ক বো-তে নিজেদের সাজাতে থাকে। সকলেই যেন ভেটরের জীবনের সাথে জীবন মেলাতে দলে দলে যুবক-যুবতীরা আত্মহত্যা করতে আরম্ভ করল।

শুধু একটি মানুষ নির্কার । ভেটরের জীবনের সেই বিষাদ, বিষণ্নতা, অন্ধকার তাঁর জীবনকে স্পর্শ করতে পারেনি কারণ তিনি যে চির আলোর পথিক, ভেটরের স্রষ্টা, জামান সাহিত্যের অবিসংবাদিত শ্রেষ্ঠ পুরুষ যোহান উলফগ্যঙ ভন গ্যেটে।

গ্যেটের জন্ম জামনির ফ্রাঙ্কফুট শহরে। তারিখটি ছিল ১৭৪৯ সালের ২৮শে আগস্ট। গ্যেটের প্রপিতামহ ছিলেন কামার, পিতামহ দজি। পিতামহ চেয়েছিলেন সম্ভ্রান্ত নাগরিক হিসেবে ছেলেকে গড়ে তুলতে। গ্যেটের পিতা যোহান ক্যাসপর পড়াশেুসা শেষ করে উচ্চপদস্থ কমচারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন। যোহান ছিলেন যেমন শৃঙ্খলাপরায়ণ তেমনি সুপণ্ডিত। অন্যদিকে গ্যেটের মা ছিলেন সহজ সরল উদার হদয়ের মানুষ। গ্যেটেন পিতা এবং মাতা দুজনেরই ছিল ব্যাপক প্রভাব। গ্যেটে লিখেছেন, আমার জীবন সম্বন্ধে দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠেছিল পিতার কাছ থেকে মায়ের কাছে পেয়েছিলাম সৃষ্টির প্রেরণা।

ছেলেবেলা থেকেই গ্যেটে ছিলেন এক ভিন্ন চরিত্রের মানুষ। পিতা যোহান ক্যাসপার চেয়েছিলেন ছেলে তাঁর মতই একজন উচ্চপদস্থ রাজকমচারী হবে। চার বছর বয়সে গ্যেটেকে স্কুলে ভতি করে দেওয়া হল। কিন্তু স্কুলের ছোট্ট গণ্ডির মধ্যে অল্পদিনেই গ্যেটের প্রাণ হাঁপিয়ে উঠল। মাস্টারদের শাসন, অন্য ছেলেদের দুষ্টামি, কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলার বেড়াজালে কিছুতেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারলেন না। অসুস্থ হয়ে পড়লেন। বাধ্য হয়ে পিতা তাঁকে বাড়িতে এনে গৃহশিক্ষক রেখে পড়াবার ব্যবস্থা করলেন। একদিকে চলতে লাগল ল্যাটিন, গ্রীক, ইটালিয়ান, ইংরাজি ভাষা শিক্ষা, অন্যদিকে ছবি আকাঁ, গান শেখা। এরই মধ্যে শৈশব কালেরই গ্যেটের মনে গড়ে উঠেছিল এক ভিন্ন জগৎ। যা প্রচলিত জীবন পথ তেকে স্বতন্ত্র, ছ বছর বয়সে ঈশ্বরের অস্তিত্বে সন্দেহ প্রকাশ করেন।

পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে পথে পথে ঘুরে বেড়াতেন গ্যেটে। দুচোখ ভরে দেখতেন প্রকৃতির অপরুপ শোভো। মানুষজন বাড়িঘর জীবনের নানা রুপ। যা কিছু একবার দেখেতেন জীবনের স্মৃতিপটে তা অক্ষয় হয়ে থাকত। কৈশোরের এই অভিজ্ঞতা পরবতীকালে তাঁর নানান রচনায় মূর্ হয়ে উঠেছে। কৈশোরেই শুরু হয়েছিল তাঁর সাহিত্য জীবনের হাতেখড়ি। তিনি নিজের সম্বন্ধে লিখেছেন, ‘‘যখন আমার দশ বছর বয়স তখন আমি কবিতা লিখতে শুরু করি যদিও জানতাম না সেই লেখা ভাল কিম্বা মন্দ। কিন্তু উপলব্ধি করতে পারতাম অসাধারণ কিছু সৃষ্টি করবার ক্ষমতা আমার মধ্যে রয়েছে।” প্রকৃতপক্ষে জন্ম থেকেই তিনি কবি। কবিতা ছিল তাঁর সত্তায় আর সেই সত্তার সাথে মিশে ছিল তাঁর প্রেম। যে প্রেমের শুরু মাত্র পনেরো বছর বয়সে। শেষ প্রেম চুয়াত্তর বছর বয়সে।

একদিন গ্যেটে তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে সরাইখানায় গিয়েছেন, সেখানে দেখলেন সরাইখানার মালিকের কিশোরী কন্য মাগুরিতকে। তাঁর চেয়ে কয়েক বছরের বড়। কিন্তু প্রথম দর্নেই মুগ্ধ হলেন গ্যেটে। অল্প দিনেই দুজনে পরস্পরের প্রতি গভীর প্রেমে আকৃষ্ট হলেন। গ্যেটে লিখেছেন তাঁর প্রতি আমার দুনিবার আকষণ আমার মনের মধ্যে সৃষ্টি করল এক নতুন সৌন্দযের জগৎ আর আমাকে উত্তোরিত করল পবিত্রতম মহত্ত্বে।

গ্যেটের কৈশোর জীবনের প্রথম প্রেম দীঘস্থায়ী হয়নি। মাগুরিতে ফ্রাঙ্কফুট ছেড়ে পিতার সঙ্গে গ্রামে চলে গেলেন।

বিচ্ছেদ বেদনায় সাময়িক ভেঙে পড়লেও ধীরে ধীরে আবার নিজেকে আনন্দ জগতে ভাসিয়ে দিলেন গ্যেটে। সমস্ত দিন বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আমোদ আহ্লাদেই কেটে যায়। ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়লেন পিতা। স্থির করলেন আইন পড়বার জন্য গ্যেটেকে লিপজিগে পাঠাবেন।

অনিচ্ছা সত্ত্বেও শুধুমাত্র পিতাকে সন্তুষ্ট করবার জন্য গ্যেটে লিপজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভতি হলেন। আইনের প্রতি সামান্যতম আকষণ ছিল না তাঁর। ক্লাস কামাই করে অধিকাংশ সময় তিনি ঘুরে বেড়াতেন পথে প্রান্তরে, বাজারে মানুষের ভীড়ে। “আমি মনে করি এই পৃথিবী আর ঈশ্বর সম্বন্ধে আমার জ্ঞান কলেজের শিক্ষকদের চেয়ে বেশি। আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চার-দেওয়ালের ক্লাসঘরের মধ্যে থেকে আমি যা জানতে পারব,  বাইরের উন্মুক্ত পৃথিবীর মানুষদের কাছ থেকে তার থেকে অনেক বেশি জানতে পারবে।”

তাঁর এই জীবনবোধের অনুপ্রেরণায় মাত্র সতেরো বছর বয়সে রচনা করলেন নাটক ……….. শেষ নাটকটির বিষয়বস্তু হচ্ছে বিবাহিত জীবনের ব্যভিচার। এক বৃদ্ধ যিনি যৌবনের পাপের জন্য নিয়ত অনুশোচনায় যন্ত্রণা ভোগ করেছেন, এক নৈতিক প্রশ্ন তাঁর জীবনে বড় হয়ে উঠেছে। তরুণ গ্যেটের মনে হয়েছে। আমরা সকলেই অপরাধী। অপরাধবোধের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার শ্রেষ্ঠ পথ অন্যকে ক্ষমা করা, অতীতকে বিস্মৃত হওয়া।

গ্যেটে কৈশোর অতিক্রম করে যৌবনে পা দিয়েছেন। তাঁর স্বপ্নালু চোখ সুদর্ন চেহারা, ‍প্রাণের উচ্ছলতা সকলকে আকৃষ্ট করে। এক অজানা আকষণে যে তাঁর সংস্পশে আসে, সেই মুগ্ধ হয়ে যায়। উচ্ছাসের রঙিন ফেনায় লিপজিগের দিনগুলি কাটতে থাকে। এই সময় গ্যেটের পরিচয় হল বাড়িওলার মেয়ে এনেৎ-এর সাথে কয়েকদিনের মধ্যেই তার প্রেমে পড়ে গেলেন গ্যেটে। কিন্তু অল্প দিনেরই প্রেমের জোয়ারে ভাঁটা পড়ল গ্যেটের। এনেৎ-এর আচরণে তাঁর প্রতি সন্দিহান হয়ে পড়লেন। নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণায় ভেঙে পড়লেন গ্যেটে। উপরন্তু বেহিসেবী উদ্দাম জীবনবোধের কারণে তাঁর স্বাস্থ্যও ভেঙে পড়েছিল। গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। বন্ধুরা তাঁর জীবনের আশা ত্যাগ করল। কিন্তু অদম্য প্রাণশক্তিতে ভরপুর গ্যোটে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলেন। আর লিপজিগ ভাল লাগছিল না। ফিরে এলেন ফ্রাঙ্কফুটে। যোহান ক্যাসপার চেয়েছিলেন ছেলে আইনজ্ঞ হয়ে ফিরে আসবে। গ্যেটে পিতার কাছে ফিরে এলেন তবে আইনজ্ঞ হয়ে নয়, কবি হয়ে।

ছেলের পরিবতন পিতা-মাতা চোখ এড়াল না। তবুও তাঁরা আশা হারালেন না। এই সময় গ্যেটে মায়ের এক বন্ধু তাকে এ্যালকেমির (মধ্যযুগের রসায়ন শাস্ত্র) ভর্তি করে দিলেন। শুরু হয় গ্যেটের এ্যালকেমি শিক্ষা। এই এ্যালকেমি বিদ্যাকেই তিনি রুপ দিয়েছেন তাঁর ফাউষ্টে।

ফাউষ্টের জ্ঞান ফিরে আসতেই সে বলল,হেলেনকে ছাড়া জীবনে সে আর কিছুই চাই না। শয়তান নিয়ে এল হেলেনকে। ফাউষ্ট তখন আর্কেডিয়া রাজ্যের রাজা। মিলন হল দুজনের। একটি সন্তান জন্মাল কিন্তু মৃত্যুবরণ করতে হল। পুত্রের মৃত্যুর বেদনায় মারা গেল হেলেন। স্ত্রী-পুত্রের মৃত্যুতে ফাউষ্টের মনোলোকে এক অদ্ভুত পরিবতন দেখা দিল। সকল তুচ্ছতা সংর্কীণতার উর্দ্ধের উঠে যায় তার মন। সে এক মহত্তর পরিপূর্ণতার ধ্যানে আত্মমগ্ন হতে চায়। সমুদ্রের তীরে এক নির্জন অর্নুবর প্রান্তরে গড়ে তুলতে চায় শস্যক্ষেত্র, নতুন জনবসতি।

ফাউষ্টের চিন্তা-ভাবনায় অস্থির হয়ে ওঠে শয়তান। এ ফাউষ্টবেন তাঁর ইচ্ছাশক্তির দ্স নয়। শয়তানের সাহায্যে গড়ে ওঠে নতুন জনপদ। সেখানে তৈরি হয়েছে প্রাসাদ, বাগান, বাড়ি, ঘর। তৈরি হয়েছে জলাশয়,খাল।

ফাউষ্ট এখন বৃদ্ধ, ধীর শান্ত। নিজের মধ্যেই আত্মমগ্ন হয়ে থাকে। সেই প্রাসাদের কাছেই থাকত এক বুড়ো- বুড়ি। তাদের কুটিরে বসে উপাসনা করত।তাদের উপসনার ঘন্টাধ্বনি বেজে উঠত। মাঝে মাঝে এত তন্ময়তার গভীরে ডুব দিত ফাউষ্ট, যে সেই মৃদু ঘন্টাধ্বনিও তার তন্ময়তা ভঙ্গ করত। ফাউষ্ট আদেশ দিল ঐ বড়ো-বুড়িকে সরিয়ে দিতে।

সাথে সাথে শয়তান গিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিল কুটিরে। এই দৃশ্য দেখে রাগে ফেটে পড়ল ফাউষ্ট। সে তো দুই বুড়ো-বুড়িকে হত্যা করতে চায়নি চেয়েছিল অন্য কোথাও পাঠিয়ে দিতে।

বয়েসের ভারে ক্রমশই স্থবয়ি আসে ফাউষ্ট। চোখের দৃষ্টি কমে আসে। কিন্তু তবুও কাজ করে চলে ফাউষ্ট। তার অপর কোন কামনা নেই, স্বর্গের কোন ভাবনা নেই তার, যা কিছু কাজ এই পৃথিবীতে শেষ করে যেতে হবে।

শ্রমিকেরা কাজ করে। তাদের বিচিত্র শব্দ ভেসে আসে। ফাউষ্টের মনে হয় কর্মের মধ্যে যেন সঙ্গীতের সুর। এক অপার্থিব আনন্দে তার সমন্ত অন্তর ভরে ওঠে।

গড়ে উঠেছে নতুন জনপদ, কৃষিক্ষেত্র, জীবন প্রবাহ। ফাউষ্টের মন আনন্দে ভরে ওঠে। মনে তার সব কাজ শেষ হয়েছে। পরম শান্তিতে মৃত্যুবরণ করে।

শয়তান আসে ফাউষ্টের আত্মাকে দখল নিতে। কিন্তু তার আগে এসে দাঁড়াল দেবদূতের দল। শয়তান চেয়েছিল সুখ আর ভোগের বিলাসে ফাউষ্টকে ভাসিয়ে দিতে। কিন্কু সেই সুখ আর ভোগবিলাসকে অতিক্রম করে ফাইষ্ট খুঁজে পেয়েছিল এক মহত্তর জীবন। তাই শয়তানের কোন অধিকার নেই তার উপর। দেবদূতের দলতার আত্মাকে নিয়ে গেল ঈশ্বরের কাছে।

সংক্ষেপে এই ফাউষ্টের কাহিনী। মহাকবি গ্যেটের তার জীবনব্যাপী সাধনা দিয়ে গড়ে তুলেছেন এই ফাউষ্টের। ফাউষ্ট যেন তাঁরই আত্মার প্রতিরুপ। সে সমস্ত জীবন কর্মের সাধনায়, জ্ঞানের সাধনায় নিজেকে ব্যাপ্ত রেখেছিল। ফাউষ্টের মধ্যে ফুটে উঠেছে মহাকাব্যিক ব্যাপ্তি। মানুষ জীবনের সব আশা-নিরাশা, বিশ্বাস-অবিশ্বাস, পাপ পূণ্য নিয়ে আত্মিক-আধ্যাত্মিক সংকটের বিচিত্র রুপ এখানে ফুটে উঠেছে। এই কাব্য পৃথিবীর সাহিত্য জগতের এক অনন্য সম্পদ। ফাউষ্টের রচনাপর্বেই গ্যেটে রচনা করেন তাঁর আত্মজীবনীমূলক রচনা “কাব্য এবং সত্য”। যদিও এতে তিনি সঠিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করেননি তবুও তার জীবন সম্বন্ধে অনেক কিছু জানা যায়।

জীবনের শেষ পর্বে এসে প্রাচ্যের কবি হাফিজের কাব্যের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েন এবং তাঁরই প্রভাবে রচনা করেন বেশ কিছু কবিতা।

বৃদ্ধ হয়েও যৌবনের মত তারুণ্যের দীপ্তিতে ভরপুর হয়ে থাকতেন গ্যেটে। শোনা যায় ভাইমারের যুদ্ধের পর যখন নেপোলিয়নের সৈন্যবাহিনী জামার্নি দখল করে, নেপোলিয়ন আদেশ দিয়েছিলেন গ্যেটের প্রতি সামান্যতম অমর্যাদা যেন না করা হয়। তিনি গ্যেটেক আমন্ত্রণ করেছিলেন তাঁর প্রাসাদে।

১৮৩২ সালের ২২শে মার্চ। কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন গ্যেটে। অনুরাগীরা তাকে এনে বসিয়ে দিল তাঁর পাঠকক্ষের চেয়ারে। সকলেই অনুভব করছিল কবির জীবনদীপ নির্বাপিত হয়ে আসছে। এক বিষণ্ন বেদনায় আচ্ছন্ন হয়েছিল তাদের মন। দিন শেষ হয়ে এসেছিল। বাইরে অন্ধকারের ছায়া নেমে এসেছিল।

গ্যেটে চোখ মেলে তাকালেন। অস্ফুটে বলে উঠলেন, “আরো আলো।”

তারপরই স্তব্ধ হয়ে গেল চির আরোর পতিক গ্যেটের মহাজীবন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *